শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
যে আমলে মুক্তি মেলে

যে আমলে মুক্তি মেলে

স্বদেশ ডেস্ক:

মানুষ পৃথিবীতে চিরকাল বেঁচে থাকে না। আগমন ও বিদায়ের এই সংস্কৃতিকে নিবিড়ভাবে আঁকড়ে রেখে নির্দিষ্ট একটি সময় পর্যন্ত মানুষ এই পৃথিবীর আলো-বাতাস ও প্রাকৃতিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে থাকে। তাই চাইলেও সবাইকে মরতে হবে, না চাইলেও মৃত্যু এসে দোরগোড়ায় উপস্থিত হবে। আর এই মৃত্যুর পরে সৎ ব্যক্তিদের জন্য জান্নাতের প্রতিশ্রুতি রয়েছে, অসৎ ও অসফল ব্যক্তিদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের ভয়। মু’মিনের জীবনের একান্ত কামনা, তার শেষ আবাসস্থল যেন জান্নাতেই হয়। কারণ জান্নাতই মু’মিনের আসল বাড়ি। জান্নাতই সুখ ও সফলতার চাবিকাঠি। আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘প্রত্যেক প্রাণীই মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করবে এবং তোমাদের সবাইকে কিয়ামতের দিন (তোমাদের কর্মের) পূর্ণ প্রতিদান দেয়া হবে। তখন যাকেই জাহান্নাম থেকে দূরে সরিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সে-ই প্রকৃত অর্থে সফলকাম। আর এই পার্থিব জীবন তো প্রতারণার উপকরণ ছাড়া কিছু নয়।’ (সূরা আলে ইমরান-১৮৫)

প্রকৃত সফল হতে হলে, জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে চাইলে, জান্নাতের মালিক হওয়ার জন্য নিম্নোক্ত আমলগুলোর প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে :
গিবতমুক্ত জীবনযাপন করা : গিবত একটি জঘন্যতম মহামারী। গিবতমুক্ত জীবন গড়তে পারলে জাহান্নাম থেকে মুক্তি মিলবে। নবী করিম সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার (মুসলিম) ভাইয়ের সম্ভ্রম রক্ষা করে, কিয়ামতের দিবসে আল্লাহ তায়ালা তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবেন।’ (সুনানে তিরমিজি-১৯৩১)

দান করা : ইসলাম সর্বদাই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে বলে। এই মনোভাব নিয়ে দান করতে হবে। আর দানের উছিলায় আল্লাহ তায়ালা জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন। নবী করিম সা: বলেন, ‘তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচো যদিও এক টুকরো খেজুর সদকা করে হয়।’ (বুখারি-১৪১৭)

সদাচারের দ্বারা : ইসলাম সদাচারের প্রতি অনেক গুরুত্ব দিয়েছে এবং সদাচারকে প্রকৃত মুসলমান হওয়ার মাপকাঠি বানিয়েছে। ‘আমি কি তোমাদের জানিয়ে দেবো না যে, কোন ব্যক্তির জন্য জাহান্নাম হারাম এবং জাহান্নামের জন্য কোন ব্যক্তি হারাম? যে ব্যক্তি মানুষের কাছাকাছি (জনপ্রিয়) সহজ-সরল, নম্রভাষী ও সদাচারী।’ (সুনানে তিরমিজি-২৪৮৮)
কান্নার মাধ্যমে : একজন মু’মিনের বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে- তার দু’চোখ বেয়ে অশ্রু প্রবাহিত হবে। আল্লাহর স্মরণে তার হৃদয় বিগলিত হবে। আল্লাহর আজাবের ভয়ে তার অন্তরাত্মা কেঁপে উঠবে। কারণ আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দনকারীর জন্যে উচ্চ মর্যাদা রয়েছে। পরকালে মর্যাদাপূর্ণ স্থান ও সুখময় জান্নাত রয়েছে।

রাসূল সা: বলেন, ‘জাহান্নামের আগুন দু’টি চোখকে স্পর্শ করবে না- ১. আল্লাহ তায়ালার ভয়ে যে চোখ ক্রন্দন করে; ২. আল্লাহর রাস্তায় যে চোখ পাহারা দিয়ে রাত পার করে।’ (সুনানে তিরমিজি-১৬৩৯)

জোহরের পূর্বাপরের সুন্নত পালন করলে : সুন্নতের আমল, তা যদি নিয়মিত করা হয় এবং অভ্যাসে পরিণত করা হয়, তখন তার সওয়াব, তার পুরস্কারটা অনেক বড় হয়ে যায়। রাসূল সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি জোহরের আগে চার রাকাত এবং পরে চার রাকাত সালাত আদায় করবে, মহান আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেবেন।’ (ইবনে মাজাহ-১১৬০)

তাকবিরে উলার মাধ্যমে : জামাতে সালাতের সময় ইমামের প্রথম তাকবিরের সাথে মুক্তাদিও যদি তাকবির বলে একাধারে চল্লিশ দিন সালাত পড়তে পারে, তার জন্য নবী করিম সা: দু’টি সুসংবাদ দিয়ে গেছেন। বর্ণিত হয়েছে- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে একাধারে চল্লিশ দিন তাকবিরে উলার সাথে জামাতে সালাত আদায় করবে আল্লাহ তায়ালা তাকে দু’টি জিনিস থেকে মুক্তি দেবেন- ১. জাহান্নাম থেকে মুক্তি ও ২. মুনাফিকি থেকে মুক্তি।’ (সুনানে তিরমিজি-২৪১)
আয়াতুল কুরসি পাঠের মাধ্যমে : এই আয়াতে আল্লাহর একত্ববাদ, মর্যাদা ও গুণের বর্ণনা থাকার কারণে আল্লাহ তায়ালা এ আয়াতের মধ্যে অনেক ফজিলত রেখেছেন। রাসূল সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ সালাতের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, মৃত্যুর সাথে সাথে সে জান্নাতবাসী হবে।’ (নাসায়ি-৫/৩৩৯)

লেখক :

  • ইসমাঈল সিদ্দিকী

শিক্ষার্থী, উচ্চতর গবেষণা বিভাগ, শায়েখ জাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, ঢাকা

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877